Site icon বাঁশি গুরুকুল [ Bansuri Gurukul BN ] GOLN

সঙ্গীতের স্বরলিপি পদ্ধতি

স্বরলিপি পদ্ধতি

স্বরলিপি পদ্ধতি

আজকে আমরা স্বরলিপি পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করবো। মাত্রা,ছন্দ ও বিভাগ অনুযায়ী তালি ও খালির সহযোগে লিপিবদ্ধ করাকে স্বরলিপি বলে । স্বরলিপি হল লিখিত চিহ্নের দ্বারা সাঙ্গীতিক স্বরকে লিপিবদ্ধ করার পদ্ধতি। বহু প্রাচীন সভ্যতায় বিভিন্ন প্রতীকের সাহায্যে সুর লিপিবদ্ধ করার প্রচলন থাকলেও তা আধুনিক স্বরলিপির মত স্বয়ংসম্পূর্ণ ছিল না। মধ্যযুগীয় ইউরোপে প্রথম স্বয়ংসম্পূর্ণ স্বরলিপি লিখন পদ্ধতি গড়ে ওঠে এবং পরবর্তীকালে তা সমগ্র বিশ্বের বিভিন্ন ধরনের সঙ্গীতে গৃহীত হয়।

স্বরলিপি পদ্ধতি

 

স্বরলিপি লিখন পদ্ধতির প্রকার:

বিগত শতাব্দীর যে দুজন স্বরলিপি লেখার পদ্ধতি আবিষ্কার করেন গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে তাঁদের আমাদের স্মরণ রাখা উচিত। এঁরা হলেন স্বনামধন্য সংগীত বিশারদ ভাতখন্ডে ও বিষ্ণুদিগম্বর । ব পক্ষে এই দুই মহাদিকপালের চেষ্টা ও যত্নের ফলেই ভারতীয় উচ্চাঙ্গ সংগীত সংরক্ষিত ও হয়ে আসছে। তারা দুজনেই নিজ নিজ নামানুসারে নিজ নিজ পদ্ধতিতে স্বরলিপি লেখার প্রথা প্রবতন করেন।

আকারমাত্রিক স্বরলিপি

ভারতে আকারমাত্রিক স্বরলিপি উদ্ভাবন করেন দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং পরবর্তীকালে তার অনুজ জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর সেই পদ্ধতির উন্নয়ন করেন। এই পদ্ধতির স্বরলিপিতে ‘আ’-কার (-া)-এর মত চিহ্ন ব্যবহার করে তালের মাত্রা চিহ্নিত করা হয় এবং এ কারণেই এই পদ্ধতির নাম আকারমাত্রিক। এই পদ্ধতিতে সাতটি শুদ্ধ স্বর এবং পাঁচটি বিকৃত স্বর মিলিয়ে মোট বারোটি স্বর লিখিত হয় আ-কার সহযোগে। স্বরগুলি লিখিত হয় এইভাবে:

সাংকেতিক নাম শাস্ত্রীয় নাম উৎপত্তি
সা ষড়্‌জ বা খরজ ময়ূরের ধ্বনি হতে
ঋা কোমল ঋষভ
রা ঋষভ বা রেখাব বৃষভের ডাক হতে
জ্ঞ কোমল গান্ধার
গা গান্ধার ছাগলের ডাক হতে
মা মধ্যম শৃগালের ডাক হতে
হ্মা তীব্র বা কড়ি মধ্যম
পা পঞ্চম কোকিলের ধ্বনি হতে
দা কোমল ধৈবত
ধা ধৈবত ঘোড়ার ডাক হতে
ণা কোমল নিষাদ
নি নিষাদ বা নিখাদ হাতির ডাক হতে

 

মন্দ্র সপ্তক বা উদারার স্বর চিহ্নিত করতে স্বরের নিচে হসন্ত (্)-এর মত চিহ্ন ব্যবহৃত হয় এবং তার সপ্তক বা তারার স্বর চিহ্নিত করতে স্বরের উপরে রেফ্ (র্‍)-এর মত চিহ্ন ব্যবহৃত হয়। তিনটি সপ্তকে পৃথক ভাবে লিখিত ১২টি স্বর নিচে দেওয়া হল:

মন্দ্র সপ্তক (উদারা) সা্ ঋ্ রে্ জ্ঞ্ গা্ মা্ হ্ম্ পা্ দ্ ধা্ ণ্ নি্
মধ্য সপ্তক (মুদারা) সা রে জ্ঞ গা মা হ্ম পা ধা ণা নি
তার সপ্তক (তারা) র্সা র্ঋ র্রে র্জ্ঞ র্গা র্মা র্হ্ম র্পা র্দ র্ধা র্ণ র্নি

 

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত গান অর্থাৎ রবীন্দ্রসংগীত সহ অন্যান্য সমস্ত বাংলা গানে এই পদ্ধতিতে স্বরলিপি লিখিত হয়।

 

ভাতখণ্ডে স্বরলিপি

মন্দ্র সপ্তক (উদারা) सा़ रे़॒ रे़ ग़॒ ग़ म़ मऺ़ प़ ध़॒ ध़ नि़॒ नि़
মধ্য সপ্তক (মুদারা) सा रे॒ रे ग॒ मऺ ध॒ नि॒ नि
তার সপ্তক (তারা) सां रें॒ रे़ं गं॒ ग़ म़ मऺं धं॒ ध़ निं॒ निं

 

 

আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

 

পাশ্চাত্য স্বরলিপি পদ্ধতি

পাশ্চাত্য দেশ গুলিতে মোট চার প্রকার স্বরলিপি পদ্ধতি প্রকাশিত ছিল, যথা:

  1. সোল্‌ফা পদ্ধতি (Solva Notation)
  2. ন্যুম্‌স্ পদ্ধতি (Neumes Notation)
  3. চীভ্ পদ্ধতি (Cheve Notation)
  4. স্টাফ পদ্ধতি (Staff Notation)

বর্তমানে ন্যুম্‌স্ স্বরলিপি পদ্ধতির উন্নততর সংস্করণ স্টাফ স্বরলিপি পদ্ধতি পাশ্চাত্য দেশসমূহে প্রচলিত। নীচে এই স্টাফ স্বরলিপি পদ্ধতি বিশেষত্বগুলিরই আলোচনা করা হলো:

 

আরও দেখুনঃ

Exit mobile version